রক্তিম জ্যোৎস্নার রাতে: বছরের বিরল ‘ব্লাড মুন’ আকাশজুড়ে আলো ছড়াবে
বছরের দ্বিতীয় পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণে আকাশজুড়ে ঘটতে চলেছে এক বিরল জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনা। রোববার রাতে আকাশে দেখা যাবে লাল আভায় মোড়া এক রহস্যময় চাঁদ—যাকে সাধারণভাবে বলা হয় ‘ব্লাড মুন’।
বিবিসি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সময় অনুযায়ী সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৯টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত চলবে এই চন্দ্রগ্রহণ। তবে, বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় সময় অনুসারে গ্রহণের সূচনা ও চূড়ান্ত দৃশ্য ভিন্ন হতে পারে।
বাংলাদেশে চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে রোববার রাত ৯টা ২৮ মিনিটে। চাঁদ সম্পূর্ণভাবে রক্তিম আভা ধারণ করবে রাত ১১টা ৩০ মিনিট থেকে সোমবার রাত ১২টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত। এরপর রাত ২টা ৫৫ মিনিটে চাঁদ পুরোপুরি পৃথিবীর ছায়া থেকে বের হয়ে আসবে।
এই মহাজাগতিক দৃশ্য বাংলাদেশ, এশিয়া, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার অনেক দেশ থেকে পরিষ্কারভাবে দেখা যাবে। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বের প্রায় ৮৫% মানুষ এই বিরল চন্দ্রগ্রহণ প্রত্যক্ষ করতে পারবে।
চাঁদের লাল হওয়ার বিজ্ঞান
চাঁদ কেন লালাভ আভা ধারণ করে তা ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানীরা। সূর্যের আলো যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল অতিক্রম করে চাঁদে পৌঁছায়, তখন বায়ুমণ্ডলের বাতাস ও কণা আলোর নীল অংশকে ছড়িয়ে দেয় এবং লাল আলোর অংশকে চাঁদ পর্যন্ত পৌঁছতে দেয়। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘রেইলি স্ক্যাটারিং’। ফলে, চাঁদ পুরোপুরি রক্তিম বা আগুন রঙের দেখায়।
দেখা এবং উপভোগের পরামর্শ
- নিরাপদ: ব্লাড মুন দেখতে কোনো সুরক্ষা চশমা বা বিশেষ যন্ত্রের প্রয়োজন নেই।
- উন্নত দৃশ্যের জন্য: বাইনোকুলার বা টেলিস্কোপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
- বিশেষ স্থান: নরউইচ শহরের মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে গ্রহণ উপভোগ করতে পারবেন, যেখানে পূর্ণগ্রাস শুরু হবে স্থানীয় সময় ১৯:২৫ মিনিটে।
এই চন্দ্রগ্রহণের গুরুত্ব
এই চন্দ্রগ্রহণকে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে দৃশ্যমান ও দীর্ঘস্থায়ী গ্রহণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে যারা আকাশজগতে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
বাংলাদেশে দেখা যাবে কিনা?
বাংলাদেশ থেকে এই চন্দ্রগ্রহণ পুরোপুরি দেখা যাবে। চাঁদ সম্পূর্ণ রক্তিম আভা ধারণ করবে রাত ১১:৩০ থেকে ১২:৫২ পর্যন্ত। এরপর ধীরে ধীরে চাঁদ পৃথিবীর ছায়া থেকে বের হয়ে আসবে এবং রাত ২:৫৫ নাগাদ পূর্ণভাবে স্বাভাবিক চাঁদ হিসেবে দৃশ্যমান হবে।
0 Comments